লাইফস্টাইলঃ
আগে মানুষের মুখে পুড়ে গেলে বা কোন দাগ পড়লে সেটা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হতো। তবে এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছেন ইরাকের এক নারী বাসমা হামিদ।
দুই বছর বয়সে থার্ড ডিগ্রী বার্ণ এ মুখের একাংশ পুড়ে যায় বাসমা হামিদ এর। ভাইয়ের সাথে খেলা করার সময় গরম তেল পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পোড়া মুখের ক্ষত এক সময় শুকিয়ে গেলেও রেখে যায় ভয়ঙ্কর চিহ্ন। বীভৎস দগদগে ক্ষতের কারণে ভয়ে অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিত। অনেকটা এক ঘরে কেটেছে স্কুল জীবন।
বাসমা হামিদ জানান, প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আমার জন্য খুবই কষ্টের অভিজ্ঞতা ছিল। অনেকেই বিভিন্ন নামে ডাকত ,ঠাট্টা করত। অনেকে আবার অকারণে খারাপ ব্যবহার করত। পরবর্তীতে জন্মভূমি ইরাক থেকে কানাডায় গিয়ে স্থায়ী হন বাসমার পরিবার। একাধিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বারবার প্লাস্টিক সার্জারি এবং লেজার ট্রিটমেন্ট এর পরেও হাল ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা।
এক পর্যায়ে ডাক্তাররা জানান, এই শেষ। আমি এখন চিকিৎসার ঊর্ধ্বে। শুধু শুধু টাকা খরচ না করে কষ্ট ভুলে থাকার জন্য কোথাও গিয়ে ঘুরে আসার জন্য।
তবে এরপরেও দমে যাননি বাসমা। ট্যাটুর আড়ালে ক্ষতের দাগ লুকিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন তিনি। অবশ্য অনেকেই বলেছিল এতে ফল মিলবে না।
কিন্তু সবাইকে অবাক করে বাসমা আবিষ্কার করার নতুন ফর্মুলা। যাতে খুব সহজে ক্ষতচিহ্ন ঢেকে ফেলা যায় ট্যাটুর আড়ালে। ২০০৭ সালে খুলেন নিজের ক্লিনিক। সেখানে ছুটে আসেন দেশ-বিদেশের নানা মানুষ। যেখানে রয়েছে হলিউডের বিভিন্ন তারকা থেকে শুরু করে ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামও।
২০১৬ সালে পেয়েছেন বর্ষসেরা উদ্যোক্তা পুরস্কার।
একসময় ক্ষতস্থানের কারণে ভুক্তভোগী বাসমা হামিদ আজ মুছে দিচ্ছেন হাজারো মানুষের ক্ষত।