পাটের আঁশ থেকে পচনশীল পলিমার ব্যাগ তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের এক বিজ্ঞানী। পাট দিয়ে তৈরি কিন্তু দেখতে একদমই পলিথিনের ব্যাগের মত এই ব্যাগ। পরিবেশের কোন ক্ষতি না করে মাত্র ১২০ দিনের মধ্যে এই ব্যাগ মিশে যাবে মাটির সাথে।
উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে প্রতি বছরে বিলিয়ন বিলিয়ন ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। খাবার থেকে শুরু করে আমদানি রপ্তানিকৃত জিনিসপত্র- সব কিছু রক্ষার জন্য দরকার ব্যাগ বা র্যাপিং। প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সব ধরনের উপদান দিয়েই ব্যাগ বানানো হয়। প্লাস্টিক ও পলিসিন্থেটিক জাতীয় রাসায়নিক উপাদানের আগে প্রাকৃতিক তন্তু যেমন তুলা, পাট এসব দিয়ে ব্যাগ বা থলে তৈরি হত। কিন্তু সহজলভ্য, পানিরোধী আর কম দামি হওয়ায় পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যাগের উৎপাদন আর ব্যবহার সময়ের সাথে সাথে অনেক বেড়েছে।
অথচ পলিথিন বা প্লাস্টিক জাতীয় উপাদান পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর কারণ। এটি সহজে পচনশীল নয় আর সেজন্য এটি আমাদের ইকোসিস্টেমে খারাপ প্রভাব ফেলছে। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার কমানোর অনেক চেষ্টা করছে। আর আশার কথা এই যে এই সাহায্য তারা বাংলাদেশ থেকেই পেতে পারে।
কেননা বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে পাট দিয়ে তৈরি কিন্তু দেখতে একদমই পলিথিনের ব্যাগের মত ব্যাগ। পরিবেশের কোন ক্ষতি না করে মাত্র ১২০ দিনের মধ্যে এই ব্যাগ মিশে যাবে মাটির সাথে। পাটের আঁশ থেকে পচনশীল পলিমার ব্যাগ তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের এক বিজ্ঞানী। তিনি হলেন বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের ইন্সটিটিউট অফ রেডিয়েশন অ্যান্ড পলিমার টেকনোলজি এর চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মুবারক আহমদ খান।
তিনি পাটের ফাইন সেলুলোজকে আলাদা করে এর সাথে সিক্রেট কিছু রাসায়নিক দ্রব্য এবং ক্রসলিঙ্কার মিশিয়ে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ড্রায়ার মেশিনে বিক্রিয়া ঘটান। এই মূলনীতিতে তিনি তৈরি করেন পাটের তৈরি পলিব্যাগ, যার নাম তিনি দিয়েছেন ‘সোনালি ব্যাগ’।
ইতিমধ্যেই ঢাকার ডেমরার বাওয়ানী জুট মিলে পরীক্ষামূলকভাবে ‘সোনালি ব্যাগ’ তৈরির শুরু হয়েছে। বিজেএমসি এর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই প্ল্যান্টটি সফলভাবে কাজ করতে পারলে সরকার বাণিজ্যিকভাবে এই ব্যাগ উৎপাদন শুরু করবে। পাটের তৈরি এই পলিমার ব্যাগ সাধারণ পলিব্যাগ থেকে দেড় গুণ বেশি মজবুত আর এর বাজারমূল্যও হবে সবার ধরা ছোঁয়ার মধ্যে।