জন্মের কয়েক বছর যেতে না যেতেই জীবনের রঙ নিভে যেতে বসেছে ছোট্ট শিশু হাবিবার। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে এক পায়ে বাঁশ লাগিয়ে বেঁধে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে শিশু হাবিবার। ছোট্ট একপি পায়ের সাথে অন্য পায়ে বাঁশের টুকরো নিয়ে হাবিবাকে জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
এ বয়সে পাখির মতো ডানা মেলে ছোটার কথা এই ছোট্ট হাবিবার। উল্লাসে অবিরাম ছুটে চলার কথা খেলার সাথীদের নিয়ে। অথচ এক পায়ে বাঁশ বাধা নিয়ে জীবন টেনে নিতে হচ্ছে কিশোরগঞ্জের ৬ বছরের শিশু হাবিবাকে।
একটি দুর্ঘটনা থামিয়ে দিয়েছে শিশুটির জীবনের গতি। এই ছোট্ট হাবিবা কে নিয়ে চরম হতাশায় আছেন পরিবার। সামান্য কিছু টাকার অভাবে কৃত্রিম পা লাগাতে পারছেন না বাবা-মা। কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়নের বাদলা গ্রামের নুরুল আমিনের এই ছোট্ট হাবিবা। বাবা রিকসা চালিয়ে পরিবারের জন্য ভরনপোষন চালান।
হাবিবার বয়স তখন তিন বছর। নানীর সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চড়ে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিল। এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় হাবিবার এক পা বিচ্ছিন্ন আলাদা হয়ে যায়। সেই থেকে শুরু কষ্ট নামক হাবিবার গল্পের কথা। ছুঁয়েছে ৬ বছরের কষ্টের নীল পাথর।হাবিবার বাম পায়ের সঙ্গী যেন এক চিলতে বাঁশ। স্বাভাবিকভাবে চলতে শিশু হাবিবার একটি কৃত্রিম পা দরকার। খুব এককটাবেশি টাকার ব্যাপার না। ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু হাবিবার পরিবারের কাছে এটাই অনেক বড় বোঝা।
তবে বাবা-মা স্বপ্ন দেখেন তাদের প্রিয় সন্তানের পাশে কেউ না কেউ দাঁড়াবে। আবার কিছুটা স্বাভাবিকভাবে হাঁটবে ৬ বছরের এক মাত্র সন্তান হাবিবা। শিশু হাবিবা জানায়, বাঁশ বেঁধে হাঁটতে তার অনেক কষ্ট বেথা হয়। সবার মত মন চায় হাঁটতে, খেলতে। স্কুলে যাইতে। তবে পারিনা।হাবিবার বাবা নুরুল আমিন জানায়, রিকশা চালিয়ে কোনমতে সংসার চালাই। মেয়ের চিকিৎসার টাকা পাবো কেমনে। মেয়ের চিকিৎসা ও একটি পা লাগাতে পারলে মেয়েটা একটু শান্তি পেত।
ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা( ডা. অতিশ দাস) রাজীব জানান,গেছে সোমবার (১ মার্চ) শিশু হাবিবাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলো মেয়েটির বাবা। তার পায়ের অবস্থা দেখেছি। মেয়েটির জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে হাসপাতাল থেকে।তিনি জানান, হাবিবার পায়ের বাঁশ খুলে আপাতত প্লাস্টিকের একটি শেল্টার লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। কৃত্রিম পা লাগানোর বিষয়ে ঢাকা মেডিকেলসহ বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করছি।